*মধ্যযুগের বিশ্ববিদ্যালয় গুলির অবদান বৌদ্ধ জীবনের উপর
বিশ্ববিদ্যালয় এর অবদান :
ল্যাটিন শুধু “Universities
“ থেকে ইংরেজি “
University “ শব্দটির উৎপত্তি যার প্রতিশব্দ বিশ্ববিদ্যালয়. প্রাচীন ও মধ্যযুগের প্রথম দিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
গুলি studium generale নামে পরিচিত ছিল. পরে “University” কথাটির ব্যবহার করা হয়. বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় যে অর্ধ
ব্যবহৃত হয় দ্বাদশ শতকে পন্ডিত মহলের তার উৎপত্তি অস্তিত্ব উদ্ধার করেছেন . সে সময়
"Universitas" শব্দটির অর্থ
শিক্ষক ও ছাত্র কুলকে বোঝাতো মধ্যযুগের ইউরোপে যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান আধুনিক ও বর্তমান
মানব জীবনের সঙ্গে ও মানব সমাজ ও সভ্যতাকে প্রভাবিত করে তার মধ্যে অন্যতম ছিল বিশ্ববিদ্যালয়.
মধ্যযুগের ইউরোপে বিভিন্ন সময় গড়ে ওঠা প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়, বেলোনা বিশ্ববিদ্যালয়,
অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৃতি সে যুগের সমাজ শিক্ষা ও সংস্কৃতির চর্চায়
ও বৌদ্ধ জীবনে বিশেষ অবদান রেখে যায়.
প্রথমত:
মধ্যযুগের ইউরোপের বিশ্ববিদ্যালয় গুলি তৎকালীন সামাজিক জীবনের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে. সামাজিক ও সংস্কৃত জীবনের অগ্রগতি দূত হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে গুলির শ্রী বৃদ্ধি ঘটে.
দ্বিতীয়ত:
শিক্ষা - সংস্কৃতির বিকাশে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান অগ্রগণ্য বর্তমান কালে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি শিক্ষার
আদর্শ ও পদ্ধতি প্রভৃতি ক্ষেত্রে মধ্যযুগের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কাছে ঋণী . সুবিন্যস্ত
শিক্ষাব্যবস্থা শিক্ষান্ত ডিগ্রী প্রদান, শ্রেণীকক্ষের দৈনন্দিন ঘটনা ভিত্তিক অধ্যাপনার
প্রথা বিশ্ববিদ্যালয়ে গুলির উদ্ভবের ফলে সম্ভব হয়েছে.
তৃতীয়ত:
বিশ্ববিদ্যালয়গুলি সামাজিক মর্যাদা লাভের একটি অপরিহার্য মাধ্যম রূপে পরিগণিত হয়. ঋণ দরিদ্র নির্বিশেষে
প্রত্যেকের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় দরজা খোলা থাকতো.
চতুর্থত:
বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে ইউরোপের ধনী ব্যক্তিবর্গের মধ্যে বিদ্যানুরাগ ও বিদ্যাচর্চার বিশেষ আগ্রহ তৈরি হয় . অনেক ধনী ব্যক্তি প্রভাবিত ও মেধাবী দরিদ্র ছাত্রদের শিক্ষার ব্যয়ভার বহন করতো.
পঞ্চমত:
সামাজিক ও সংস্কৃতির উত্তরণে এবং রাজনৈতিক পরিবেশে সৃষ্টিতে অনেক ছাত্রকে যোগ্য শিক্ষা প্রদান করে গড়ে তুলতে মধ্যযুগের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির অগ্রনী ভূমিকা নিয়েছিল.
ষষ্ঠত:
রোমান আইন ও ক্যানন আইন চর্চার মাধ্যমে বেলোনা ও প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয় বহু আইন তৈরি করে. এই সমস্ত ব্যক্তিরা ইউরোপের নতুন রাজ্যগুলিতে অপরিহার্য হয়ে পড়ে . চিকিৎসা শাস্ত্রের উত্তীর্ণ ছাত্ররা তৎকালীন জনস্বাস্থ্যে সুরক্ষার বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ এনেছিল.
সপ্ততম:
মধ্যযুগের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উচ্চশিক্ষা বিস্তারে করে. ইউরোপীয়দের মনে স্বাধীনতা বীজ বপন করে পরবর্তীকালে এই শিক্ষা যুক্তিবাদী দর্শনের প্রসার ঘটায়. ইউরোপীয় দ্বাদশ শতকের রেনেসাঁস পটভূমি রচনাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা নিয়েছিল অপরিসীম. বলা যায় মানুষে
হৃদয়ে বিশ্ববিদ্যালয় গুলির স্থান ছিল যথেষ্ট. ঐতিহাসিক Tout মন্তব্য করেন যে বিশ্ববিদ্যালয় গুলি ছিল- “
The most abiding Product of the genius of the middle ages “
অষ্টতম:
মধ্যযুগের বিশ্ববিদ্যালয় কেবল উচ্চ শিক্ষায় নয় ছাত্রদের নতুন চিন্তার উন্মেষ ও ছাত্রদের মনের দিগন্তে প্রসারে সাহায্য করে.
নবমতম:
বিশ্ববিদ্যালয়গুলি মানুষজনের আর্থিক জীবনে যাত্রার মান উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিল. বিশ্ববিদ্যালয় গুলিকে কেন্দ্র করে কোনো একটি স্থানে জনসমাগম ঘটতে শুরু করে . পরবর্তীকালে তা নগর আকার ধারণ করে. বিশ্ববিদ্যালয়গুলির
প্রতিষ্ঠার সুবাদে বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ নানা আর্থিক কাজে নিযুক্ত হয়ে জীবিকা নির্বাহ
করে . বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা প্রাপ্তি ছাত্ররা শাসন ও চর্চায় অধীনে বিভিন্ন দপ্তরে
নিয়োজিত হয়.
উপরোক্ত আলোচনার উপর ভিত্তি
করে বলা যায় যে মধ্যযুগীয় ইউরোপের বিশ্ববিদ্যালয় তৎকালীন সাম্রাজ্য ও সংস্কৃতির
জীবনের সুদৃঢ় প্রসারী প্রভাব ফেলেছিল . বিশ্ববিদ্যালয়
গুলি অন্যতম দায়িত্ব ছিল মানব মনের বিকাশ .সেই যুগের বিশ্ববিদ্যালয় গুলি ছিল আজকের
বিশ্ববিদ্যালয় ও উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান চর্চার অনুপ্রেরণা.
![]() |
| University |
