![]() |
| লর্ড কর্নওয়ালিস |
চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বলতে বোঝায় জমিদারগণ কর্তৃক কোম্পানিকে বছরে নির্দিষ্ট পরিমাণ খাজনার বিনিময়ে বংশানুক্রমে জমির মালিকানা ভোগের অধিকার । ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দের ২২ মার্চ কর্নওয়ালিশ বাংলায় চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু করেন । এই ব্যবস্থায় জমিদাররা নির্দিষ্ট খাজনার বিনিময়ে বংশানুক্রমে জমির মালিকানা ভোগ করত বাংলা বিহার ও উড়িষ্যায় চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু করা হয় । চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তনের উদ্দেশ্য ছিল ঔপনিবেশিক অর্থনীতিকে সুদৃঢ় করা ।
চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের বৈশিষ্ট্য :
১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দের ২২ মার্চ বাংলায় চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তিত হয় । এই ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যগুলি হল—
- জমিদাররা বংশানুক্রমিকভাবে জমির উত্তরাধিকারী স্বত্ব ভোগ করতে পারতেন । বিনিময়ে
জমিদারকে নির্দিষ্ট দিনে সূর্যাস্তের পূর্বে সরকারি কোশাগারে ভূমিরাজস্ব জমা দিতে হত । - ভূমিরাজস্বের হার নির্দিষ্ট এবং স্থির থাকত , খরা , বন্যা বা অন্য কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয়েও রাজস্ব মকুব করা হত না ।
- জমিদারগণ ইচ্ছা করলে জমি দান বা বিক্রি করতে পারতেন
চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সুফলগুলি :
১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে লর্ড কর্নওয়ালিস চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তন করেছিলেন । এর সুফলগুলি ছিল—
- চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তনের ফলে সরকারের প্রাপ্য রাজস্বের পরিমাণ নির্দিষ্ট হয়েছিল ।
- জমিতে জমিদারের স্বত্ব সুনিশ্চিত হওয়ার জন্য জমির উন্নতির দিকে জমিদারগণ নজর দিয়েছিলেন ।
- তা ছাড়া কৃষকদের অবস্থার উন্নতি ঘটেছিল ।
চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের কুফলগুলি :
১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে লর্ড কর্নওয়ালিস ‘ চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তন করেছিলেন । এর কুফলগুলি ছিল—
- ‘ সূর্যাস্ত আইন ’ অনুসারে জমিদারগণ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খাজনা দিতে না পারলে জমিদারি হাতছাড়া হত ।
- নিলামের মাধ্যমে জমির বন্দোবস্ত দেওয়ার ফলে অনেক ভুঁইফোড় জমিদারের উৎপত্তি হয়েছিল ।
- কৃষক ও সরকারের মাঝে মধ্যস্বত্বভোগী শ্রেণির উদ্ভব হয়েছিল , ফলে কৃষকদের উপর অত্যাচার বেরেছিল ।
