Administration of the Cholas
চোলদের প্রশাসন -
চোল সাম্রাজ্যকে কেন্দ্রীয় সরকার, প্রাদেশিক সরকার এবং স্থানীয় সরকার নামে তিনটি প্রধান প্রশাসনিক ইউনিটে বিভক্ত করা হয়েছিল। চোলদের রাজধানী ছিল তাঞ্জোর। উত্তরমেরুর শিলালিপি চোলদের প্রশাসনের উপর আলোকপাত করে।
* কেন্দ্রীয় প্রশাসন =
রাজার নেতৃত্বে প্রশাসন। চোল রাজত্ব বংশগত ছিল। চোল রাজপরিবারের ঐতিহ্য অনুসারে, জ্যেষ্ঠ পুত্র চোল সিংহাসনে রাজার স্থলাভিষিক্ত হন। আপাত উত্তরাধিকারীকে বলা হত যুবরাজ। বাঘ ছিল চোল রাজাদের রাজকীয় প্রতীক। রাজাকে তার কাজে সাহায্য করত মন্ত্রী পরিষদ। নিচের কর্মকর্তাদের বলা হতো সিরুন্তরাম আর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের পেরুন্তরাম বলা হতো।
* প্রাদেশিক প্রশাসন =
সমগ্র সাম্রাজ্যকে মন্ডলম নামে নয়টি প্রদেশে বিভক্ত করা হয়েছিল। প্রতিটি প্রদেশের নেতৃত্বে ছিলেন একজন ভাইসরয় যিনি রাজার কাছ থেকে আদেশ পেতেন। প্রতিটি মন্ডলম কোট্টাম বা ভ্যালানাদুসের সংখ্যায় বিভক্ত ছিল, যা পরবর্তীতে নাড়ুতে উপ-বিভক্ত ছিল। প্রতিটি নাড়ু আবার উরস নামে গ্রামে বিভক্ত ছিল।
* স্থানীয় প্রশাসন =
চোলদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ইউনিট ছিল নাড়ু। প্রতিটি নাড়ুর নেতৃত্বে ছিলেন একজন নাট্টার যখন নাড়ুর কাউন্সিলের নাম ছিল নট্টভাই। গ্রাম প্রশাসনের দায়িত্ব ন্যস্ত করা হয়েছিল গ্রামসভা নামক গ্রাম সভাকে, যা চোল প্রশাসনের সর্বনিম্ন ইউনিট। এটি রাস্তা, সেচ, মন্দির এবং পাবলিক পুকুর রক্ষণাবেক্ষণের সাথে জড়িত ছিল।গ্রাম থেকে রাজার ভান্ডারে বকেয়া কর পরিশোধের দায়িত্বও ছিল গ্রামসভা। গ্রাম শাসন কার্যকরভাবে পরিচালিত হত ভরিয়ামদের দ্বারা যারা সমাজের পুরুষ সদস্য হত। বিভিন্ন প্রকারভেদ ছিল। উদাহরণ স্বরূপ ন্যায়বিচার নিয়্যা ভারিয়াম দ্বারা পরিচালিত হত যখন মন্দিরগুলি ধর্ম ভারিয়ান দ্বারা দেখাশোনা করা হত। অর্থের নিয়ন্ত্রণ পোন-ভারিয়ামকে দেওয়া হয়েছিল।
*ভূমি রাজস্ব =
চোল সরকার আয়ের প্রধান উৎস হিসেবে প্রধানত ভূমি রাজস্বের উপর নির্ভর করত। জমির উৎপাদনের 1/6 ভাগ কর হিসেবে আদায় করা হতো। ভূমি রাজস্ব ছাড়াও শুল্ক ও টোল ছিল সাম্রাজ্যের আয়ের অন্য উৎস। তদুপরি, বন্দর, বন এবং খনিগুলির উপর কর রাজার ভান্ডারে অবদান রাখত।
*সেনাবাহিনী =
চোলদের একটি দক্ষ সেনাবাহিনী এবং নৌবাহিনী ছিল। সেনাবাহিনী 70টি রেজিমেন্ট নিয়ে গঠিত হয়েছিল। চোল রাজারা অত্যন্ত দক্ষ আরবীয় ঘোড়াগুলি উচ্চ মূল্যে আমদানি করতেন।
*বিচারিক প্রশাসন =
চোল রাজা প্রধান বিচারপতি হিসাবে কাজ করতেন, কারণ বড় মামলার বিচার রাজা নিজেই পরিচালনা করতেন। গ্রাম পর্যায়ে ছোটখাটো বিবাদ গ্রামসভায় শোনা যেত।