Administration of the Pallavas
*পল্লবদের প্রশাসন =
পল্লবরা রাজতন্ত্রের ব্যবস্থা অনুসরণ করেছিল। রাজা ছিলেন রাজ্যের প্রধান। বংশানুক্রমে সিংহাসনে বসার রীতি প্রচলিত ছিল। সাধারণত, জ্যেষ্ঠ পুত্র পরবর্তী শাসক হবে। পল্লব রাজারা নিজেদের ভগবানের প্রতিনিধি মনে করতেন। তারা মহারাজা, মহারাজাথি রাজা এবং ধর্ম রাজাথিরাজার মতো অনেক উপাধি গ্রহণ করেছিল। এই উপাধিগুলি পল্লব রাজাদের সাম্রাজ্যিক শক্তি নির্দেশ করে। পল্লব রাজারাও ঐশ্বরিক উৎস বলে দাবি করেছিলেন।
*মন্ত্রী পরিষদ =
পল্লব রাজ্যে একটি দক্ষ মন্ত্রী পরিষদ ছিল। মন্ত্রীরা অমাত্য নামে পরিচিত ছিলেন। তাদেরকে উথামসীলান, ব্রহ্মরাজান এবং পেরারাইয়ান উপাধি দেওয়া হয়েছিল। মন্ত্রী রাজার আদেশ পালন করেন। প্রশাসনের যাবতীয় বিষয়ে তারা রাজাকে তাদের সহযোগিতা ও সেবাও দিয়েছিল। মন্ত্রিপরিষদ ছাড়াও পল্লব প্রশাসনের প্রতিটি বিভাগের দেখাশোনার জন্য অনেক আধিকারিক ছিলেন।
* বিচার বিভাগ =
পল্লব রাজ্যে তিন ধরনের আদালত ছিল। সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থাকে বলা হত ধর্মসেনা। রাজা এর প্রধান হিসাবে কাজ করেছিলেন। শহরের আদালতগুলো আদিকর্ণ নামে পরিচিত ছিল। গ্রাম আদালতকে বলা হতো কর্ণ। গ্রাম সভাগুলি গ্রামে নাগরিক বিরোধ নিষ্পত্তিতে আদালত হিসাবেও কাজ করত। শাস্তি নিষ্ঠুর এবং কঠোর ছিল না। শাস্তির পাশাপাশি জরিমানাও করা হয়েছে।
* সেনা =
পল্লবদের একটি শক্তিশালী এবং বড় সেনাবাহিনী ছিল। সেনাবাহিনীতে চারটি ডিভিশন ছিল। তারা ছিল পদাতিক, অশ্বারোহী, হাতি এবং রথ। যুদ্ধে অশ্বারোহী বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। পল্লবদেরও নৌবাহিনী ছিল। আমরা ইতিমধ্যে লক্ষ করেছি যে নরসিংহবর্মণ আমি শ্রীলঙ্কায় দুটি নৌ অভিযান পাঠিয়েছিলাম।
* রাজস্ব =
ভূমি কর ছিল সরকারের আয়ের প্রধান উৎস। এছাড়াও অন্যান্য কর ছিল। পল্লবদের তাম্রশাসন ও শিলালিপিতে আঠারো ধরনের করের উল্লেখ আছে। ট্যাক্সের উদ্দেশ্যে হ্রদ, ট্যাঙ্ক, কূপ, নদী এবং গাছের সংখ্যা গণনা করা হয়েছিল। কর বিভিন্ন নামে পরিচিত ছিল যেমন কানাম, ইরাই, পাতাম এবং পুচি। যেমন, কুসাকানাম শব্দটি কুমোরদের উপর কর এবং থান ইরাই তাঁতিদের উপর কর বোঝায়। তেল-চাপা, টডি-টেপার, ধোপা, স্বর্ণকার এবং গবাদি পশুপালকদের উপরও কর আরোপ করা হয়েছিল।
* স্থানীয় প্রশাসন =
স্থানীয় সংস্থাগুলির অস্তিত্ব এবং কার্যকারিতা পল্লব প্রশাসনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক গঠন করে। নাড়ু ও ওর ছিল প্রশাসনের একক। এসব বিভাগ পরিচালনা করত সংশ্লিষ্ট কমিটি। নাড়ুর কমিটি নাত্তার নামে পরিচিত ছিল। তারা রাজার আদেশ পালন করত এবং নাড়ু প্রশাসনের দেখাশোনা করত। কাছ ওড় বা গ্রামের সভা বা কমিটি গ্রাম প্রশাসনের দায়িত্বে ছিল। সভার সদস্যরা পেরুমক্কাল নামে পরিচিত ছিল। প্রতিটি সভা ভারিয়ামস নামে পৃথক কমিটিতে বিভক্ত ছিল। প্রতিটি ওয়ারিয়াম মন্দির, সেচের ট্যাঙ্ক এবং গ্রামের বাগানগুলির প্রশাসনের তত্ত্বাবধান করত। এইভাবে, পল্লব শাসনামলে গ্রাম প্রশাসন সুসংগঠিত ছিল। এটা বলা যেতে পারে যে পল্লবরা পরবর্তী চোলদের সময় গ্রাম প্রশাসনের ভবিষ্যত সম্প্রসারণের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন।
![]() |
| পল্লব |
